সালমান খান কেন বিয়ে করে না?

 সাংবাদিক- "সত্যি করে বলবেন, এখনও কেন বিয়ে করছেন না?"





সালমান- "সত্যি জানতে চান? আচ্ছা বলছি, তবে কাউকে বলবেন না যেন! (হাসি) আমার সমসাময়িকদের তুলনায় আমি বেশি ভুল করেছি, সেটা সিনেমার চয়েজের ক্ষেত্রে হোক আর ব্যক্তিগত জীবনে তো আছেই। একটা ভুলের কারণে জেল খাটতে হলো। অনেক ডিপ্রেসড ছিলাম ওই সময়টায়, ইচ্ছেমতো অত্যাচার করেছি নিজের উপর, কি করতাম নিজেই জানতাম না! তাছাড়া আপনারা জানেন, আমার নামে দুটো মামলা আছে, আদালতে বিচার চলছে। আমার আইনজীবীরা আমাকে বাঁচানোর, অন্ততপক্ষে আমার সাজা কমানোর চেষ্টা করছেন, আমি জানিনা এই মামলাগুলোর ফল কী হবে।
এখন ধরুন এই মুহূর্তে আমি বিয়ে করলাম, এক বছর পরে আমার একটা সুন্দর বাচ্চা হল। আমি সুখে শান্তিতে জীবন কাটানো শুরু করতে যাবো ঠিক তখনই আদালত থেকে যদি আদেশ আসে যে আমাকে আবার জেলে জেতে হবে, তখন অবস্থাটা কেমন দাঁড়াবে? আমি জেলের ভিতরে আর জেলের বাইরে আমার বাচ্চা আমার সাথে দেখা করতে আসবে আর তখন আমি তাকে বলব "হ্যালো বেটা!" - এই দৃশ্যটা সিনেমাতে আবেগঘন দৃশ্যে হয়ত ভালো লাগবে। কিন্তু বাস্তব জীবনে বিশ্বাস করুন, ভাল লাগবে না। আমি আমার নিজের জীবনের সাথে যা ইচ্ছে করেছি, কিন্তু অন্যের জীবনের সাথে এরকম কিছু আমি কেন করব? অন্য কারো জীবন নষ্ট করার অধিকার আমার নেই।"
অনেকেই হয়ত জানেন না, এই মানুষটা বেশ বিরল একটা রোগে ভুগছেন, রোগটার নামও আবার গালভরা- ‘ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়া’। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির চোয়াল হঠাৎ করে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু করে কোন কারণ ছাড়াই। পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত যারাই এই রোগের শিকার হয়েছেন তাদের বেশিরভাগ মানুষ শেষ পর্যন্ত ব্যথা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন, এই কারণে এই রোগের অপর নাম ‘সুইসাইডাল ডিজিজ’।
অথচ এই মানুষটা প্রায় সাত বছর ধরে এই রোগটার সাথে খাপ খাইয়ে চলছেন। এই রোগের কোন স্থায়ী চিকিৎসা নেই, কিছু ওষুধ খেলে কিছুক্ষণের জন্য ব্যথা কমে- এর বেশি কিছু না। ব্যথার পরিমাণ কীরকম হয় তার মুখেই শোনা যাক- “যখন ব্যথা শুরু হয়, তখন মনে হয় কেও যেন ইলেকট্রিক ড্রিল মেশিন দিয়ে আমার গালদুটোকে ফুটো করেই যাচ্ছে, থামার কোন নাম নেই! এই যন্ত্রণার কথা বলে বুঝানো যাবে না।” এই রোগটার আরেকটা সমস্যা হচ্ছে, দিন দিন গলার স্বরকে আগের চেয়ে বেশি কর্কশ বানিয়ে দেয়।
এত কিছুর পরেও বিনোদনের ফেরিওয়ালা হয়ে তিনি আনন্দ দিয়ে যাচ্ছেন সবাইকে। সূর্য পূর্ব দিকের জায়গায় ভুল করে কোনো একদিন পশ্চিম দিকেও উঠে যেতে পারে, তবে সালমানের সিনেমাতে পয়সা উসুল ‘এন্টারটেইনমেন্ট’ পাওয়াটা যে মিস হবে না কখনও- সেই ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। ইনসেপশন, প্রিডেসটিনেশন টাইপ মাথা ‘আউলানো’ সিনেমার পর এই মানুষটার সিনেমা দেখলে মাথা হালকা হয়, সাথে ক্ষণিকের বিনোদন তো আছেই। তবে নিজের আত্মীয়-স্বজন এবং পছন্দের মানুষদের নিজের প্রযোজিত সিনেমায় জোর করে ঢোকানোর অভ্যাসটা সেই নির্মল বিনোদনে যে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে, সেটা ভাইজান যত দ্রুত বুঝবেন, ততই ভালো!

C - CineGolpo

No comments

Powered by Blogger.