ISLAMIC 1

আসসালামু আলাইকুম।

বৌ কে বলেছি কই গিয়েছিলে, বউ রেগে বলে তোমার বাবার সাথে শুয়েছিলাম।
এতে কি আমাদের বিয়ের কোন সমস্যা হয়েছে? হলে করণীয় কি?
দয়া করে জানাবেন।

Similler Passage to find Answer -



আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল


প্রশ্ন: 'হুরমতে মুসাহারা' এর বিধান কি?
উত্তর:
১. মহান আল্লাহ তায়ালা ছেলের স্ত্রী কে (পুত্রবধূকে) পিতার জন্য হারাম করেছেন। অর্থাৎ শ্বশুর এবং পুত্রবধূ একে অপরের জন্য বিবাহ নিষিদ্ধ মাহরাম। আল্লাহ তাআলা বলেন,
حلائل أبنائكم الذين من أصلابكم
"(এবং তোমাদের জন্যে হারাম করা হয়েছে) তোমাদের ঔরসজাত সন্তানের স্ত্রীদেরকে।"
[সূরা নিসা: ২৩]
২. হানাফী মাযহাবে কড়াকড়ি ভাবে ফতোয়া দেওয়া হয় যে, কোন শশুর যদি তার পুত্র বধূ কে কামপ্রবৃত্তির সাথে স্পর্শ করে, অথবা কাম প্রবৃত্তির সাথে তার যৌন ইন্দ্রিয়ের দিকে দৃষ্টিপাত করে অথবা ধর্ষণ করে/সহবাসে লিপ্ত হয় (নাউযুবিল্লাহ) ‌তাহলে সে তার স্ত্রীর মতো হয়ে যাবে এবং উক্ত পুত্রবধূ তার পুত্রের মায়ের মত হয়ে যাবে!!
সুতরাং স্বভাবতই তার স্ত্রী তার জন্য হারাম হয়ে যাবে।
এগুলো হুরমতে মুসাহারা নামক ফতোয়ার একেকটি রূপ।
কিন্তু এই ফতোয়া সম্পূর্ণ দলিল বহির্ভূত ও ভিত্তিহীন।
শরিয়ত সম্মতভাবে বৈধ পন্থায় বিবাহের মত হালাল এবং সুদৃঢ় সম্পর্ক তৃতীয় পক্ষের কারো অপরাধের কারণে নিমিষেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে না। তালাক ব্যতিরেকে কখনোই বিবাহ বিচ্ছেদ হয় না। ইসলামে এমন কোনো বিধান নেই।
৩. কোন পিতা যদি কু-প্রবৃত্তির তাড়নায় বা শয়তানের ওয়াস ওয়াসায় পড়ে এমন অপকর্ম করে থাকে তাহলে নিঃসন্দেহে সে অপরাধী। জিনা করলে তার ওপর হদ বা দণ্ডবিধি কায়েম হবে‌। পুত্রবধুর সাথে কোন ফাসেক শ্বশুর অন্যায় করলে অবশ্যই তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
কিন্তু পিতার অপরাধের কারণে ছেলে তার হালাল স্ত্রী থেকে বঞ্চিত হতে পারে না। এটা একজনের অপরাধে আরেকজনকে শাস্তি দেওয়ার শামিল- যা ইসলাম সম্মত নয়।
সুতরাং উপরোক্ত ফতোয়া কুরআন-হাদিস সম্মত নয়।
৪. এই তথাকথিত ফতোয়ার কারণে অসংখ্য ফিতনার দরজা উন্মুক্ত হয়ে যেতে পারে। যেমন: কোন মহিলা যদি তার শ্বশুর-শাশুড়ি পরিবারে থাকতে না চায় তখন খুব সহজেই শশুরের প্রতি এই জাতীয় অপবাদ চাপিয়ে দিতে পারে।
৫. তবে মহিলাদের জন্য সতর্কতার বিষয় হলো, যদি সে তার ফাসেক প্রকৃতির শ্বশুরের ব্যাপারে কোনো ধরনের সন্দেহ করে তাহলে তার ব্যাপারে সর্তকতা অবলম্বন করবে। কারণ মানুষের মধ্যে ভালো-মন্দ রয়েছে। ফাসেক-ফাজের রয়েছে।
অতএব যদি শ্বশুর বা অন্যান্য মাহরাম পুরুষদের কারও মধ্যে ফাসেকি আলামত দেখা যায় বা কোনরূপ সন্দেহ সৃষ্টি হয় তার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন অপরিহার্য।
هذا ما عندي الله اعلم بالصواب
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব।

No comments

Powered by Blogger.